
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) এক শিক্ষককে ধর্ষণের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অভিযুক্ত শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিকৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সুজন চৌধুরী।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে সুজন চৌধুরীকে বরখাস্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। তার বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনরতদের হুমকি দেওয়া এবং বিভাগীয় পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসেরও অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী চট্টগ্রামের বাসিন্দা এক নারীর অভিযোগ, ২০২৪ সালের ২২ অক্টোবর ড. সুজন চৌধুরীর দ্বারা নিজের বাসাতে একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হন তিনি। এরপর ভুক্তভোগী ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালে মামলা করেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল যবিপ্রবির রেজিস্ট্রার বরাবর অভিযোগ দিলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ড. সুজন চৌধুরীকে সাময়িক বহিষ্কার করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব বলেন, ‘আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ আসে।যেহেতু বিষয়টি বিচারাধীন। ভুক্তভোগীর অভিযোগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সুপারিশে তাকে (সুজন চৌধুরীকে) সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী নারী উল্লেখ করেছেন, ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর তিনি থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ সুজন চৌধুরীর কাছ থেকে অর্থ নিয়ে মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করে এবং আদালতে যেতে পরামর্শ দেয়। পরে তিনি চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।মামলার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সুজন চৌধুরীকে কয়েক দফায় ডাকা হলেও তিনি বিভিন্ন অজুহাতে এড়িয়ে যান এবং ভুক্তভোগীকে বিভিন্ন সময় প্রাণনাশের হুমকি দেন। বর্তমানে ড. সুজন চৌধুরী বাদীকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ড. সুজন চৌধুরী বলেন, ‘আমাকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা দাবি করছেন ওই নারী। অভিযোগ মিথ্যা।’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সুজন চৌধুরীর বিরুদ্ধে আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজ বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে।নারী শিক্ষার্থীদের হয়রানি করার অভিযোগ থাকলেও ক্ষমতার কারণে মুখ খোলেনি কোনো ভুক্তভোগী।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তিনি শিক্ষার্থীদের প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিয়ে আন্দোলনের বিরোধিতা করেন। পরবর্তীতে নিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাকে সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অপসারণের দাবি তুলে আন্দোলন করেন।
আপনার মতামত লিখুন :