
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, গত ছয় মাসে বাংলাদেশের অর্থনীতি যেভাবে পুনরুদ্ধার হয়েছে, তা এক ধরনের ‘মিরাকল’। তিনি আরও জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পূর্বে দেশের অর্থনীতি এমন এক সংকটময় অবস্থায় পৌঁছেছিল, যা যেকোনো সময় মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারত।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ডিজেএফবি) আয়োজিত ‘ডিজেএফবি টক’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রেস সচিব বলেন, “এনার্জি খাতে ডিসিপ্লিন ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন।” তিনি উল্লেখ করেন, বিশেষভাবে বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতির কারণে সেখানকার অবস্থা সংকটময় হয়ে পড়েছিল। এনার্জি সিস্টেমে অপচয় ও অসততার কারণে দেশের বিদ্যুৎ খাত চরম সংকটে পড়েছিল। তবে এখন সরকার বড় বড় পাওয়ার কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করে বিদ্যুৎ খাতে স্থায়ী সমাধানের জন্য কাজ করছে। পাশাপাশি, গ্যাস খাতে প্রচুর কূপ খননের পরিকল্পনা রয়েছে।
এছাড়া, দেশের বিনিয়োগ পরিবেশের উন্নতির জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বাড়ানোর উপর গুরুত্ব আরোপ করেন শফিকুল আলম। তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বাড়ানো হলে বৈদেশিক বিনিয়োগও বৃদ্ধি পাবে।” তিনি উল্লেখ করেন, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার জন্য চট্টগ্রামের বন্দরের উন্নয়ন অপরিহার্য।
শফিকুল আলম সরকারের অতীতের কিছু অপচয়কেও আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, “একমাত্র মসজিদ নির্মাণের জন্য ১৫ থেকে ১৬ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে, যেখানে ওই কাজটি পাড়ার কমিটি ৩ কোটি টাকায় করতে পারত।” তিনি আরও বলেন, “মোটা টাকা খরচের পরও, রেললাইন সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না, যা জনগণের টাকার অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়।”
এছাড়া, তিনি আরও জানান, সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের ফলে ব্যাংকিং সেক্টরে ব্যাপক দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা উন্মোচিত হয়েছে। সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামানের কাছে একটি টানেল নির্মাণের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এই ধরনের অপচয় শুধু দেশের জন্য ক্ষতিকর নয়, বরং এটি দেশের আর্থিক সঙ্কটকে আরও গভীর করেছে।”
প্রেস সচিব আরও বলেন, "অর্থনীতি প্রায় বিপর্যস্ত ছিল, তবে গত ছয় মাসে যে পুনরুদ্ধার ঘটেছে তা এক ধরনের মিরাকল।” তিনি আরও জানালেন, অপচয় এবং দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার ট্যাক্স বৃদ্ধি করেছে, এবং বাজেটের বড় একটি অংশ বর্তমানে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে ব্যবহার করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের (ডিজেএফবি) সভাপতি হামিদ-উজ-জামান।
এই বক্তব্যের মাধ্যমে, প্রেস সচিব দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তার গভীর উদ্বেগ এবং সরকারের বর্তমান পদক্ষেপগুলির জন্য আশা প্রকাশ করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :