• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

বিশ্বে বছরে ৪ কোটি মানুষের অনিরাপদ খাদ্য খেয়ে মৃত্যু হয়


FavIcon
অনলাইন ডেস্ক:
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪, ০৯:০৪ পিএম
বিশ্বে বছরে ৪ কোটি মানুষের অনিরাপদ খাদ্য খেয়ে মৃত্যু হয়

বিশ্বে প্রতিবছর অনিরাপদ খাদ্য খেয়ে ৬০ কোটি লোক অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে ৪ কোটি মানুষের মৃত্যু হয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) অতিরিক্ত পরিচালক অমিতাভ মণ্ডল।বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শাহবাগে বিএফএসএ আয়োজিত গবেষণার প্রাক-অবহিতকরণ সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

অমিতাভ মণ্ডল বলেন, অনিরাপদ খাদ্যে বিশ্বে প্রতিবছর ৬০ কোটি লোক অসুস্থ হয়, ৪ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়। বিশ্বে বছরে ৪০ শতাংশ শিশু রোগাক্রান্ত হয় ও ১ লাখ ২৫ হাজারের মৃত্যু হয়।সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আহসান হাবীব বলেন, মাইক্রো ও ন্যানো প্লাস্টিকের ব্যবহারের মাত্রা এমন পর্যায়ে গেছে যে, তা নদী ও সাগরে ছড়িয়ে পড়ছে। মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর খাদ্যগুলো নিয়ে গবেষণায় গুরুত্ব দিতে হবে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সাইয়েন্সের অধ্যাপক ড. শারমিন রুমি আমিন বলেন, আমাদের সাধারণ মানুষের তথা নিম্ন আয়ের মানুষের অন্যতম পছন্দের খাবার পাঙাশ ও তেলাপিয়া মাছে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মাত্রা এতো বেশি যে, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এক রোগের ওষুধ খেলে অন্যান্য রোগ মাথা চাড়া দিয়ে উঠে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর এডভান্সড রিসার্চ সায়েন্সের প্রিন্সিপাল সায়েন্টিস্ট ড. এসকে আরিফুল হক বলেন, স্কুলের সামনে বিক্রি হওয়া আচার, ফুসকাসহ শিশুরা যে ধরনের খাবার খায় সেসব থেকে ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়।

বিএফএসএ চেয়ারম্যান জাকারিয়া বলেন, দেশে ৭০ ভাগ মৃত্যু হয় অসংক্রামক রোগে। তারমধ্যে ডায়রিয়ার কারণে মৃত্যু রয়েছে ৪ নম্বরে। তাই আমাদের গবেষণার মাত্রা বাড়াতে হবে। কর্তৃপক্ষের আমাদের গবেষণার সময়সীমা পরিবর্তন করা দরকার, অথচ আমাদের সময় দেয়া হয় এক বছর।

বিএফএসএর সাবেক পরিচালক ড. সহদেব চন্দ্র সাহা জানান, মানুষকে নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ করাও একটি ইবাদত। ইতোপূর্বে ১৩টি দুধের স্যাম্পলের মধ্যে ১১টিতে হেভি মেটার পাওয়া গিয়েছিল। এটি নিয়ে কাজ করাই তা থেকে উত্তরণ হয়েছে। বর্তমানে ১০টি গবেষণায় অর্থায়ন করা হচ্ছে। আশাকরি দেশের খাদ্য ব্যবস্থায় এটি বড় অবদান রাখবে। স্ট্রিট ফুডগুলোতে নানা ধরনের রঙ ব্যবহার খাবারকে আকর্ষণ করে তোলা হয়। এসব খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মাসুম বলেন, দেশে পশু মোটা-তাজাকরণে স্ট্রয়েট ড্রাগ ব্যবহার হচ্ছে না বলা হলেও কিন্তু খামারিরা এটি ব্যবহার করছে। খামারিরা প্রথমে স্বীকার না করলেও পরবর্তীতে তারা জানায় তারা হলুদ বা গোলাপি বড়ি নামে ব্যবহার করে। আর এসব ড্রাগ সীমান্ত এলাকায় বেশি ব্যবহার হয়। কেননা ভারত থেকে এগুলো সহজেই পাচার হয়ে দেশে আসে। আমরা পশুর রক্ত ও মূত্র পরীক্ষা করে স্ট্রয়েড ব্যবহারটা তুলে ধরব।

পথিকৃৎ ইনস্টিটিউট অব হেলথ স্টাডিজের চিফ রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট অধ্যাপক ড. মো. হাফিজুর রহমান বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশপাশে ফাস্টফুড বা জাঙ্কফুডের দোকান বেশি। শিক্ষার্থীদের ২৫ শতাংশ ফাস্ট ফুড খায়। তারমধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ ধরনের খাবার বেশি খায়। এসব তৈলাক্ত খাবারে জিহ্বায় আলাদা স্বাদ জমে। তাতে করে এসব খাবারের প্রতিবেশী আকর্ষিত হয়। তখন অন্য খাবার ভালো লাগে না।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্সের ড. মাহফুজা মোবারক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেইরি সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোহেল রানা সিদ্দিকী, নোয়াখালী সায়েন্স অ্যান্ড টেকননোলজি ইউনিভার্সিটির ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন সায়েন্সের অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর সরকার প্রমুখ।


Side banner
Link copied!