দায়িত্ব পাবার পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে আশার বার্তা শুনিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ডিএমপির অধীন কোনো থানা থেকে মানুষ যথাযথ সেবা না পেলে সিনিয়র অফিসাররা সপ্তাহে অন্তত একদিন হলেও থানায় উপস্থিত থেকে সবকিছু দেখভাল করবেন। তারপরও থানায় গিয়ে মানুষ যদি কাক্সিক্ষত সেবা ও ভালো আচরণ না পায়, তাহলে সিনিয়র কর্মকর্তারাসহ তিনি নিজে থানায় গিয়ে ‘ওসিগিরি’ করবেন। তিনি জানান, দায়িত্ব নেওয়ার পরেই ঢাকার সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও উপকমিশনারদের (ডিসি) সঙ্গে বসে থানার সেবা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে তিনি কঠোর ভাষায় কথা বলেছেন। ওসি-ডিসিদের প্রয়োজনীয় ও কঠোর মনিটরিংয়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নবনিযুক্ত ডিএমপি কমিশনারের এসব উদ্যোগ নিঃসন্দেহে মহৎ।রাজধানীতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট ও টিআইদের সঙ্গে ডিসিরাও মাঠে কাজ করবেন বলে জানান সদ্য যোগদান করা ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। রাজধানীর যানজট নিরসনে তিনি ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে একদম নিচ পর্যায়ের কর্মকর্তারাও যানজট নিরসনে মাঠে কাজ করবেন। শুধু তাই নয়, ঠিকমতো কাজ হচ্ছে কি না, তা মনিটরিংয়ের নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি। আমরা তার এই উদ্যোগকেও সাধুবাদ জানাই। তবে একটি পরিকল্পিত শহরের জন্য যে পরিমাণ রাস্তা থাকা দরকার, ঢাকয় তার ধারেকাছেও নেই। আরো বড় সমস্যা হচ্ছে, বেশিরভাগ মানুষই আইন মানে না। সবাইকে ধরে ধরে আইন মানানোর মতো জনবল পুলিশের নেই। আর দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের আচরণে বিরক্ত হয়ে জনগণের সাথে দূরত্ব সৃষ্টি হওয়ায় পুলিশকে সহায়তা করার মানসিকতাও মানুষ হারিয়ে ফেলেছে।মূলত বিপদে পড়েই মানুষ পুলিশের কাছে যায়। কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই থানায় গিয়ে মানুষ কাঙ্খিত সহায়তা পায় না। একারণে পুলিশের প্রতি মানুষের একধরণের নেতিবাচক মনোভাব কাজ করে। পুলিশকে মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে। বিপদগ্রস্ত মানুষ থানা থেকে বের হয়ে যেন এই ধারণা করে যে, পুলিশ আমাকে সহযোগিতা করবে। সাধারণ মানুষ যাতে পুলিশ-ভীতি থেকে বের হতে পারে, সে ব্যবস্থা নিতে হবে। থানায় সেবা নিতে যাওয়া কাউকে যেন কোনো ধরনের হয়রানি না করা হয়, সে বিষয়ে লক্ষ রাখতে হবে পুলিশকে। সাধারণ মানুষ যাতে পুলিশের দ্বারা হয়রানি, চাঁদাবাজির শিকার, পুলিশি সেবার বিপরীতে যাতে আর্থিক লেনদেন না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। কারো বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা আশা করি পুলিশ কমিশনারের উদ্যোগ শুধু কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, কার্যকর হবে। জনগণ ও পুলিশের মধ্যে সুসম্পর্ক সৃষ্টি হবে এবং ঢাকা নগর নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ হবে।
আপনার মতামত লিখুন :