• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫, ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১

গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী তামজীদ হোসেনের টেন্ডার বাণিজ্য ও দুর্নীতির অভিযোগ


FavIcon
নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৫, ০৩:৩৯ পিএম
গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী তামজীদ হোসেনের টেন্ডার বাণিজ্য ও দুর্নীতির অভিযোগ

জুলাই ২০২৪-এ সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানের পর, গণপূর্ত অধিদপ্তরের মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়, বিশেষ করে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে। এই পরিবর্তনের অংশ হিসেবে, চট্টগ্রাম গণপূর্ত ই/এম বিভাগ-২ থেকে নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ তামজীদ হোসেনকে ঢাকার গণপূর্ত ই/এম বিভাগ-৫-এ বদলি করা হয়। তবে, ঢাকায় যোগদানের পরপরই তার বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

টেন্ডার বাণিজ্য এবং অর্থ আত্মসাৎ:
তামজীদ হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি ঢাকায় আসার পর থেকে টেন্ডার বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। তার সহযোগী হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের ঠিকাদার মনোয়ার হোসেন ভুট্টোকে তিনি ঢাকায় নিয়ে আসেন এবং ভুট্টোকে বিভিন্ন দপ্তরে টেন্ডারের খোঁজ নিতে নিযুক্ত করেন। অভিযোগ অনুযায়ী, তামজীদ তার সহযোগীকে বিভিন্ন দপ্তরের দরপত্র সংগ্রহের জন্য নির্দেশ দেন, যাতে সুবিধাজনক টেন্ডার পাওয়া যায়।

বিশেষ সুবিধা প্রদান এবং অভিযোগের চাপ:
তামজীদ হোসেনের বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ রয়েছে যে, তিনি মো. মিঠুন নামক এক বহিরাগত ব্যক্তিকে অফিসে বিশেষ সুবিধা প্রদান করেছেন এবং তাকে চেয়ার-টেবিল বরাদ্দ করেছেন। জানা গেছে, মিঠুন প্রকৌশলী তামজীদ হোসেনের ব্যক্তিগত ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব পালন করছেন। এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর, অফিসের অধীনস্থ কর্মচারীরা ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে অভিযোগ দায়ের করেন। তবে, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে অভিযোগকারীরা আবার আবেদন জমা দিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, অভিযোগ তুলে নিতে তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয় এবং পরবর্তীতে সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হয়।

চট্টগ্রামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ:
চট্টগ্রামে গণপূর্ত ই/এম বিভাগ-২-এ দায়িত্ব পালনকালে তামজীদ হোসেনের বিরুদ্ধে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। সেই সময়ও ঠিকাদার মনোয়ার হোসেন ভুট্টো ছিলেন তার প্রধান সহযোগী। ধারণা করা হচ্ছে, ঢাকায় এসে তিনি সেই পুরানো দুর্নীতির চক্রই চালিয়ে যাচ্ছেন।

অবৈধ সম্পদ অর্জন:
অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, তামজীদ হোসেন তার বিভিন্ন কর্মস্থলে নিয়মিত অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে যুক্ত ছিলেন এবং তিনি স্বৈরাচার সরকারের এক মন্ত্রীর আশীর্বাদপুষ্ট ছিলেন, যার কারণে তিনি দীর্ঘ সময় ধরে ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে তিনি প্রায় শতকোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।


এই বিষয়ে তামজীদ হোসেনের বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, তিনি ফোন রিসিভ করেননি। প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সাধারণ মানুষের দাবি, এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক এবং দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করা হোক, যাতে প্রকৃত সত্য উন্মোচন হয়।


Side banner
Link copied!