• ঢাকা
  • বুধবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১

সিনেমা হলের টিকিট মাস্টার থেকে কোটিপতি আওয়ামী লীগ নেতা


FavIcon
নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৪, ০৮:৩৭ পিএম
সিনেমা হলের টিকিট মাস্টার থেকে কোটিপতি আওয়ামী লীগ নেতা

বগুড়ার নন্দীগ্রামের বাঁধন সিনেমা হলে এক সময় মাত্র দেড় হাজার টাকা বেতনে কাজ করে টিকিট মাস্টার আনোয়ার হোসেন রানা (৪৫) এখন বিপুল সম্পদের মালিক। বর্তমানে তিনি বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং বিপুল সম্পদ ও বিলাসবহুল গাড়ির মালিক। তবে তার বিরুদ্ধে রয়েছে শাশুড়ির শতকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, যার ফলে তিনি রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরগা ঢাকা দিয়েছেন।

রানা বগুড়ার ধুনট উপজেলার যমুনা নদীর চর বৈশাখী গ্রামের শামসুল হকের ছেলে। নদী ভাঙনের কারণে তার পরিবার নন্দীগ্রামে বসতি স্থাপন করে। শুরুতে রানার কর্মজীবন ছিল টিকিট মাস্টারের। ১৯৯৭ সালে তিনি দৈনিক দুর্জয় বাংলার নন্দীগ্রাম উপজেলা প্রতিনিধি হন, কিন্তু দুর্নীতির দায়ে প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কৃত হন।

২০০৩ সালে রানা সাংবাদিক সাইফুল ইসলামের সঙ্গে যুক্ত হন। সাইফুল ইসলামের আকস্মিক মৃত্যু পর রানা তার বিধবা স্ত্রী আকিলা সরিফার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং ২০০৯ সালে তাকে বিয়ে করেন। এরপর থেকেই রানার জীবনযাত্রার পরিবর্তন শুরু হয়।

রানার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তার কোটিপতি শাশুড়ির সম্পত্তি আত্মসাতের পরিকল্পনা করেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং পর্যায়ক্রমে নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদ লাভ করেন। অভিযোগ রয়েছে, ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে তিনি অস্ত্রের মুখে তার শাশুড়ি দেলওয়ারা বেগমকে জিম্মি করে ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

অভিযোগ রয়েছে ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর তিনি দেলওয়ারা-সেখ সরিফ উদ্দিন সুপার মার্কেট দখলে নেন। শাশুড়ি দেলওয়ারা বেগমের মৃত্যুর ৬ দিনের মাথায় ২০২৩ সালের ১০ মে তিনি শহরতলির শাকপালা এলাকার সরিফ সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন দখল করেন। তবে ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন।

রানার শাশুড়ির জামাতা মোফাজ্জল হোসেন রঞ্জু জানান, রানা মার্কেট দখল করে নাম দেন ‘সরিফা ট্রেড সেন্টার’। এরপর থেকে তিনি মার্কেটের দোকান ভাড়া ও ডিজাইন পরিবর্তন করে ব্যাপক অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। গত চার বছরে এই মার্কেট থেকে অন্তত ১০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এছাড়া, রানার নামে-বেনামে প্রচুর জমি ও বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে। তিনি ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগে গুরুত্বপূর্ণ পদ লাভের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক কৌশল গ্রহণ করেন।

বর্তমানে তার বিরুদ্ধে শতকোটি টাকা আত্মসাতের মামলা চলমান, এবং তদন্ত কর্মকর্তারা চার্জশিট দিলেও বিচার কার্যক্রম শুরু হয়নি। রানার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

খোঁজ নিতে গেলে দেলওয়ারা-সেখ সরিফ উদ্দিন সুপার মার্কেটের কর্মচারীরা জানান, তিনি মামলাসংক্রান্ত ঝামেলায় আছেন এবং শিগগিরই ফিরে আসবেন।


Side banner
Link copied!