ভোলার চরফ্যাশন থানার ওসি মনির হোসেন মিয়ার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও চাঁদা দাবির অভিযোগ করেছেন উপজেলার কুলছুমবাগ গ্রামের ফাতেমা নামে এক নারী।ফাতেমা তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা ৪২৩/২০নং পিটিশনের সাক্ষী আমার মেয়ের কাছে ১২ সেপ্টেম্বর রাতে ওই পিটিশনের আসামি আরব আলী গংরা দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে তাকে অপহরণ চেষ্টা করে। এ সময় তাকে মারপিট করে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়।ওই রাতেই আমার মেয়েকে আহত অবস্থায় চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করি। এ ঘটনায় ১৪ সেপ্টেম্বর চরফ্যাশন থানায় একটি এজাহার দাখিল করি। ওসি মনির হোসেন মিয়া এজাহারটি আমলে না নিয়ে উল্টো আসামিপক্ষ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে আমি ও আমার স্বামীসহ সাক্ষীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা নেন।এছাড়া থানার এসআই কেরামতকে আমার বাড়িতে পাঠিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। আমি ৫ হাজার টাকা দিয়ে আমার অক্ষমতার কথা প্রকাশ করলে আমার স্বামীসহ সবাইকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানোর হুমকি দেন।আমি ওসি মনিরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে বলেন, দাবিকৃত চাঁদা না দিলে সবাইকে জেলে পাঠিয়ে দেব। তখন সবাইকে জেলে ধুঁকে ধুঁকে মরতে হবে।ওসির দাবিকৃত চাঁদা না দেয়ায় ওই রাতেই আমার স্বামী ও চাচাশ্বশুরকে গ্রেফতার করেন ওসি মনির। পরদিন এক সংবাদকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে থানায় গেলে পূবের দাবিকৃত চাঁদা পরিশোধ করতে বলেন। আমরা তাদের দাবিকৃত চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ওসি আমাদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করেন।এ ঘটনার পর গত ৮ অক্টোবর ডাকযোগে চরফ্যাশন থানার ওসি মনির হোসেন মিয়ার ক্ষমতার অপব্যবহার ও চাঁদা দাবির বিচার চেয়ে ভুক্তভোগী ফাতেমা বেগম ভোলা পুলিশ সুপারের কাছে একটি এজাহার দাখিল করেছেন এবং এর অনুলিপি স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালকসহ বিভিন্ন দফতরে প্রেরণ করেছেন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ওসি মনির হোসেন চরফ্যাশন থানায় যোগদানের পর থেকেই তিনি বিতর্কিত ভূমিকা পালন করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে প্রকৃত ঘটনার মামলা না নেয়া এবং মিথ্যা মামলা নেয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া এই থানা এলাকায় খুন, ধর্ষণ নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধ আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে।এসব অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে ওসি মনির হোসেন ব্যর্থ হয়েছেন। ধর্ষণ ও আইনশৃঙ্খলা অবনতির প্রতিবাদে গত শুক্রবার চরফ্যাশন সদরে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করেছে।অভিযোগ প্রসঙ্গে চরফ্যাশন থানার এসআই কেরামত আলী বলেন, মামলা রুজু করার দায়িত্ব ওসির। মামলা হওয়ার পর ওসির নির্দেশে আসামি গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়।চরফ্যাশন থানার ওসি মনির হোসেন মিয়া তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, ওই নারীর অভিযোগ মিথ্যা। ফাতেমা বেগম নিজেই আসামি। আর আসামিরা বাঁচতে কত কথাই না বলে।ভোলার পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, অভিযোগের কপি নজরে আসেনি। কপি পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :