শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ এর অবহেলা আর অব্যবস্থাপনা কারনে গ্রাহকদের ভোগান্তি চরম শিখরে পৌঁছে গেছে। বিদ্যুৎ বিল সংক্রান্ত ভোগান্তি, ঘনঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও রক্ষণাবেক্ষণের নামে ঘনঘন বিদ্যুৎ বন্ধ রাখায় জনমনে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এসব ভোগান্তির কারনে মানুষের মনে ক্ষোভের দানা বাধতে শুরু করেছে। প্রতিবছর মে, জুন, জুলাই ও আগস্ট এই মাসে সারা বছরের তুলনায় অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আসে গ্রাহকদের। বিগত ৫ বছর গ্রাহকদের বিল পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, সারা বছর পল্লীবিদ্যুতের কর্মীরা কখনো মিটার রিডিং নিয়ে আবার কখনো রিডিং না নিয়ে যেন-তেন ভাবে অফিসে বসে বিল তৈরী করে। আর জুন-জুলাই মাসে বিলের সমন্বয় করে গ্রাহকদের উপর অতিরিক্ত বিলের বোঝা চাপিয়ে। এসব নিয়ে গ্রাহকরা পল্লীবিদ্যুৎ অফিসে প্রতিকার চাইতে গেলে, অধিকাংশ গ্রাহকদেরই ফিরে আসতে হয় সমাধান না পেয়েই।
দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রামনের কারনে সরকার বকেয়া বিলের জরিমানা মৌকুফ করলেও, গ্রাহকপর্যায়ে এর সুফল পৌঁছাচ্ছেনা। পল্লীবিদ্যুৎ একদিকে জরিমানা ছাড়া বিল নিলেও আরেকদিকে অতিরিক্ত ভূতুড়ে বিলের বোঝা গ্রাহকদের উপর চাপিয়ে তাদের ক্ষতি সমন্বয় করে নিচ্ছে। তাছাড়া বিলে বিভিন্ন ধরনের অযথা চার্জ নিয়ে জনমনে অশান্তি চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরেই। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রাহকদের ভোগান্তি সংক্রান্ত অনেক লেখালেখি পাওয়া গেছে।
দেশে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও শ্রীমঙ্গলে প্রায় প্রতিদিনই ৩/৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে। সাতসকালে বিদ্যুৎ চলে যায়, আকাশে বিদ্যুৎ চমকালে বিদ্যুৎ যায়, আকাশ কালো করলে বিদ্যুৎ যায়, হালকা বাতাস বইলে বিদ্যুৎ যায়। আজ সুইচ পুড়ে যায়, কাল ফিউজ উড়ে যায়, পরশু ট্রান্সমিটার নষ্ট হয়ে যায়, এভাবেই চলছে মৌলভীবাজার পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি। তাছাড়া প্রতি মাসে ৪/৫ দিন রক্ষণাবেক্ষণের নামে সকাল থেকে রাত অবধি বিদ্যুৎ বন্ধ রেখেও গ্রাহকদের ভোগান্তি বাড়িয়ে তোলে পল্লীবিদ্যুৎ।
এসকল ভোগান্তির কারনে জনমনে নানান রকমের প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। বছরের তিন চার মাস ভূতুড়ে বিদ্যুৎবিল আসছে কেন, এত রক্ষণাবেক্ষণ করার পরও ঘনঘন বিদ্যুৎ চলে যায় কেন, পল্লীবিদ্যুৎ কি নিম্ন মানের সরঞ্জামাদি ব্যবহার করে, একই ট্রান্সফরমার বার বার বিকল হয়ে পড়ে কেন, এত ঘনঘন ফিউজ, সুইচ নষ্ট হয় কেন, পল্লীবিদ্যুতের মানুষ প্রতি মাসে মিটার রিডিং নিতে আসেনা কেন, আমরা নিজের টাকায় মিটার কিনে পল্লীবিদ্যুৎ কে মিটার চার্জ দেই কেন, পল্লীবিদ্যুৎ তার নামের পেছনে "সমিতি" কথাটি ব্যবহার করে কেন, "সমিতি" হিসেবে গ্রাহকরা কি সুবিধা পাচ্ছে, এমন অনেক প্রশ্নের জবাব ও সমাধান চায় শ্রীমঙ্গলবাসী।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নির্বাচন এলেই অনেক নেতাদের দেখা যায় ভোটের জন্য গ্রাহকদের দ্বারেদ্বারে হাটতে অথচ পাশ করার পর তারা গ্রাহকদের জন্য খুব একটা মাথা ঘামাননা। নেতা আসে নেতা যায়, জিএম আসে জিএম যায় অথচ শ্রীমঙ্গলের বিদ্যুৎ সংক্রান্ত ভোগান্তির উপশম হয়না। শ্রীমঙ্গলের জনগণ খুবই শান্তিপ্রিয় তবে এমন ভোগান্তি চলতে থাকলে জনগণের মনে সুপ্ত অবস্থায় থাকা শান্তি যেকোন সময় অশান্তিতে রুপ নিতে পারে বলেই মনে করেন অনেকে।
আপনার মতামত লিখুন :