
গাজীপুরের কালিয়াকৈরের মণ্ডল গ্রুপের মন্ট্রিমস লিমিটেড কারখানার বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এক শ্রমিক আত্মহত্যা করেছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দিন আহম্মদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
গতকাল বৃহস্পতিবার ইদ্রিস আলী তার ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কারখানার ভেতর বিষাক্ত ক্যামিক্যাল পান করে। এ ঘটনার পর ওই কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।মৃত ইদ্রিস আলী (১৯) নিলফামারী সদর উপজেলার নিত্যনন্দী গ্রামের আব্দুল আওয়াল মিয়ার ছেলে। তিনি কালিয়াকৈর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় পরিবার নিয়ে বাসা ভাড়ায় এবং মৌচাকের মন্ডল গ্রুপের মনট্রিমস কারখানার কার্টুন সেকশনে কাজ করতেন।কারখানার শ্রমিক বলেন, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় ভাড়া থেকে মন্ট্রিমস্ লিমিটেড কারখানায় কাজ করতেন ইদ্রিস আলী। চাকরির এক বছর হয়ে গেলেও তাকে এখনও স্থায়ী করা হয়নি।স্থায়ী করার বিষয়ে তিনি যখনই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে গেছেন তখনই তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। এছাড়া তিনি নানা বিষয়ে বেশ কিছুদিন ধরে হতাশার মধ্যে ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময়ে ইদ্রিস আলী কারখানার ক্যামিকেল পান। পরে তাকে মুমুর্ষ আবস্থায় উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।তারা আরও জানান, কারখানায় হারুন ও কামরুল ম্যানেজেন্টে যোগ দেয়ার পর থেকে শ্রমিকদের উপর অত্যাচার করছে। তারা মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে। কথায় কথায় চাকরি থেকে ছাঁটাই করে। তাদের চাকরিচ্যুত অবিলম্বে করতে হবে। না হল আরও শ্রমিক মারা যাবে।
ফেসবুক পোস্টে ইদ্রিস আলী লেখেন, ‘মণ্ডল গ্রুপের মন্টিন্স লিমিটেডে এক বছর থেকে চাকরি করি। কিছু লোক আসার তিন মাস এবং ছয় মাস হচ্ছে তাদেরকে পার্মান (পার্মানেন্ট) করে। আমাকে করে না, কারণ হচ্ছে আমরা মেশিনের লোক। একদিন ছয়টায় গিয়েছিলাম তার জন্য আমাদেরকে বিচার করেছে, আমি কি অপরাধ করছি। তাদের জন্য আমার জীবন আমি শেষ করে দেব। এর জন্য দাবি (দায়ী) আমাদের সেকশনের প্ল্যানিং কামরুল স্যার আর হচ্ছে ম্যানেজার হারুন স্যার, ওরা মানুষকে মানুষ মনে করে না। তারা মনে করে ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির তৈরি। আমি আজকে সুইসাইড করব। ঈদের দিন আমি অনেক কষ্ট পাইছি। এই পৃথিবীর মানুষ বড়ই নিষ্ঠুর, আপনারা এর বিচার করবেন।’
মন্ট্রিমস্ লিমিট কারখানার প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, কারখানার একজন শ্রমিক বিষ জাতীয় কিছু খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ কথা বলার পর তিনি ফোন কেটে দেন।
মৌচাক পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ আব্দুস সালাম বলেন, মনট্রিমস কারখানার ইদ্রিস নামের এক শ্রমিক বিষ জাতীয় কিছু খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :