
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের ঘোলপাশা ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবর্তী সালুকিয়া গ্রামে বিজিবি উপর মাদক কারবারিরা হামলা করেছে। এসময় বিজিবির নায়েক মো আবু জাফর ও ন্যান্সনায়েক সাইদুল ইসমাল আহত হয়েছে।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) সকালে এ ঘটনায় বিজিবির ক্যাম্প কমান্ডার বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে ৪৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। রাতে তথ্যটি জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো হিলাল উদ্দিন আহমেদ।
মামলার আসামিরা হলেন—আলেয়া বেগমের সহযোগী সালুকিয়া দক্ষিণ পাড়ার মো. শুভ, আজাদ, মো. ইউসুফ, রুবেল, আল আমিন, খোকন ও শাকিল।
বিজিবির আমানগন্ডা বিওপির নায়েক মো. আবু জাফর মামলায় উল্লেখ করেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় আমানগন্ডা বিওপির একটি টিম দক্ষিণ শালুকিয়া গ্রামস্থ সীমান্ত পিলার নং-২১০৬/৪ হতে বাংলাদেশের অনুমান ২০০ গজ অভ্যন্তরে ডিউটি করছিল। এ সময় বিজিবি সীমান্তে স্থাপিত বৈদ্যুতিক পিলারের লাইটের আলোতে দেখতে পায় অজ্ঞাত ৩ ব্যক্তি তাদের মাথায় কোনো বস্তু নিয়া ভারতীয় সীমান্তের দিক থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দৌঁড়ে আসছে। তখন বিজিবি টর্চ লাইট দ্বারা অজ্ঞাত ব্যক্তিদের দিকে আলো এবং বাঁশির আওয়াজ দিয়ে তাদেরকে থামতে বলে।বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে চোরাকারবারিরা পালিয়ে যাওয়ার সময় ধাওয়া করলে তারা ধান ক্ষেতে বহনকৃত বস্তু ফেলে পালিয়ে যায়। পরে বিজিবি ধান ক্ষেতে তল্লাশি করে নীল রংয়ের প্লাস্টিকের প্যাকেটে খাকি স্কচটেপ দ্বারা প্যাঁচানো ১৬ কেজি গাঁজা উদ্ধার করে। বিজিবি তল্লাশির সময় মাদক ব্যাবসায়াীরা স্থানীয় গ্রামের মানুষকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে মাইকে অসৎ উদ্দেশ্যে একাধিকবার ঘোষণা করে যে, এলাকায় ডাকাত ঢুকেছে।
মামলায় বিজিবি আরো উল্লেখ করে, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে স্থানীয় নারী মাদক ব্যবসায়ী আলেয়া বেগমের নেতৃত্বে ৩৫-৪০ জন রাম দা, ছেন দা, ট্যাটা, দা, লাঠিসোটা এবং মারাত্মক প্রাণঘাতি অস্ত্রশস্ত্র ও
ইটপাটকেল নিয়ে উপর্যুপরি টর্চ লাইটের আলো জ্বালিয়ে বিজিবিকে গালাগালি করাসহ হত্যার হুমকি দেয়।এক পর্যায়ে তারা বিজিবির উপর আক্রমণ চালিয়ে সরকারী কাজে বাধা প্রদান ও দাঙ্গার সৃষ্টি করে। মাদক চোরাকারবারিদের হামলায় বিজিবির ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক মো আবু জাফর ও ল্যান্সনায়েক সাইদুল ইসলাম আহত হয়।
খবর পেয়ে বিজিবির আরো দুইটি টিম গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে। আহত বিজিবি সদস্যরা চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেয়।
পরে বিজিবির উপর হামলা ও ১৬ কেজি মাদক বহনের অভিযোগে আলেয়া বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়।চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সীমান্তে এলাকায় বিজিবির উপর হামলার ঘটনায় ক্যাম্প কমান্ডার বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা চল্লিশ জনসহ ৪৮ মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বিজিবি বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় তারা আলেয়া বেগম (৪৮) নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করে থানা সোর্পদ করেছে। হামলায় বিজিবির দুই কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। মালার অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :