
ঢাকার কেরানীগঞ্জের অধ্যাপক হামিদুর রহমান স্টেডিয়ামে বৈশাখী মেলার অনুমতি বাতিলের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেছেন, ‘মাঠে মেলার বিষয়ে ইউএনও কী বুঝে অনুমতি দিয়েছেন, কী বুঝে বাতিল করেছেন, সেটি তাঁর ব্যাপার। কাফনের কাপড় পড়ে হলেও এখানে আমরা মেলা করব।’
আজ শনিবার সকালে ভিটি মাঠ নামে পরিচিত ওই স্টেডিয়ামে প্রশাসনের অভিযানের পর এ কথা বলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
পয়লা বৈশাখ উদ্যাপনের অংশ হিসেবে আগামীকাল সোমবার স্থানীয় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে ওই স্টেডিয়ামে দিনব্যাপী এই মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব মো. সামিউল্লাহর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মেলার অনুমতিও দিয়েছিল উপজেলা প্রশাসন। তবে গত বৃহস্পতিবার উপজেলা প্রশাসন মেলা আয়োজনের অনুমতি বাতিল করে বিজ্ঞপ্তি জারি করে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিনাত ফৌজিয়া বলেন, যখন তাঁরা জানতে পারেন মেলাটি একটি স্টেডিয়ামে করা হবে, তখন তাঁরা অনুমতি বাতিল করে দেন। এরপরও মেলার প্রস্তুতির কাজ শুরু হলে যৌথ বাহিনীর সহায়তায় অভিযান চালিয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এদিকে প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে আজ সকালে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা মেলার প্রস্তুতির কাজ শুরু করেন। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন যৌথ বাহিনীর সহায়তায় সেখানে অভিযান চালায়। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ আবদুল্লাহ আল মামুন ও কেরানীগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল মাওয়ার নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে মেলার আয়োজনের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বৈশাখী মেলা বাঙালির সংস্কৃতির অংশ। এখানে আগে মেলা হতো। ওই মেলায় সব শ্রেণি–পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিতেন। ১৭ বছর আমরা মেলা করতে পারিনি। এটাকে আমরা নতুন করে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।’
এ ব্যাপারে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) কেরানীগঞ্জ শাখার সমন্বয়ক কাওসার আহমেদ বলেন, ‘কাফনের কাপড় পরে হলেও মেলা করব’—এ ধরনের বক্তব্য কেবল জন–আতঙ্ক বাড়ায় না, বরং রাজনৈতিক নেতাদের গণবিচ্ছিন্ন অবস্থাকেও প্রকাশ করে।
মেলা আয়োজনের আবেদনকারী তেঘরিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব মো. সামিউল্লাহ বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসন মাঠে মেলার প্রস্তুতি কাজ স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। পরে মেলার অনুমোদন চেয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) কার্যালয়ে আবেদন করা হয়েছে। এখনো অনুমতি পাননি। তাঁরা আশা করছি মেলার অনুমতি পাবেন।’
আপনার মতামত লিখুন :