• ঢাকা
  • শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৯ ফাল্গুন ১৪৩১

বাগবাটী ইউনিয়নে চাঁদাবাজি,দখলদারিত্বে নেতৃত্বে ওয়ার্ড বিএনপি নেতা দুদু খাঁ


FavIcon
নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫, ০৪:২১ পিএম
বাগবাটী ইউনিয়নে চাঁদাবাজি,দখলদারিত্বে নেতৃত্বে ওয়ার্ড বিএনপি নেতা দুদু খাঁ

এক ভাই আওয়ামী লীগ নেতা, অপর ভাই বিএনপির নেতা ঘুরে ফিরে তাদের হাতেই চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে। সময়ের ব্যবধানে শুধু মাত্র রাজনৈতিক হাত বদল। এমন চিত্র খুঁজে পাওয়া যায়, সিরাজগঞ্জ জেলার বাগবাটী ২ নং ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডে। 

স্বৈরশাসক সেখ হাসিনার শাসন আমলে ঘোড়াচড়া এলাকার মফিজ উদ্দিন খাঁর পুত্র জাহিদুল ইসলাম ছিলেন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। অপরদিকে তার ভাই রেজাউল করিম খাঁন দুদু ছিলেন ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। একই পরিবারের দুই সন্তানের ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকলেও বাস্তবে চাঁদাবাজী ও দখলদারীত্বে উভয়ে ছিলেন এক। 

যে কারণে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনেও ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি বাগবাটী, পেপুলবাড়িয়া বাজার তথা ২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ ১৭ বছর আওয়ামী লীগের শাসনামলে দুদু খাঁর ভাই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলামের ভয়ে তটস্থ ছিলেন অত্র ওয়ার্ডের বিএনপির নেতা কর্মীরা। একের পর এক হামলা চালিয়েছেন বিএনপির নেতা কর্মীদের উপর। তার পেটুয়া বাহিনীর ভয়ে ভয়ে বিএনপির নেতা কর্মীরা মিছিল পর্যন্ত বের করতে পারেনি। পুরো ওয়ার্ড জুড়ে ছিল তার একক নিয়ন্ত্রণে। চাঁদাবাজি, দখলদারিত্বেও ছিলেন শীর্ষে। ভাইয়ের ক্ষমতাকে পুঁজি করে দুদু খাঁ ও তার দুই ছেলে সোহাগ ও তারেক এলাকায় চাঁদা বাজী ও দখলদারিত্বে দিয়েছেন নেতৃত্ব। 

৫ আগষ্ট ছাত্র জনতার গণআন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা। সেই সাথে অনেক নেতাকর্মীরাও চলে যান আত্ম গোপনে। অথচ দুদু খাঁর ভাই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম রয়েছেন বহাল তবিয়তে। কারণ তার ভাই রেজাউল করিম খাঁন দুদু  ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হওয়ায় এ পর্যন্ত তার নামে হয়নি কোন মামলা। একই বাড়ির আঙ্গিনায় রয়েছেন দুই ভাই মিলেমিশে।   

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, একাধিক বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৫ আগষ্টের পর অনেক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের টাকার বিনিময়ে এলাকায় থাকার ব্যবস্থাও করে দেন ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম খাঁন দুদু ও সহ-সভাপতি জহুরুল ইসলাম। 

পটপরিবর্তনের সাথে সাথে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম খাঁন দুদু ও সহ-সভাপতি জহুরুল ইসলামের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে চাঁদা বাজীর একাধিক সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেটের কার্যক্রম পরিচালনা করেন ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম খাঁন দুদুর দুই ছেলে সোহাগ ও তারেক। এদের চাঁদা বাজীর হাত থেকে রেহাই পাইনি পেপুলবাড়িয়া বাজারের মুদি দোকানদার হিন্দু সম্প্রদায়ের খোকন। চাঁদা না দেয়ায় কিছু দিন পূর্বে সভাপতির দুই ছেলে ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে খোকনকে কুপিয়ে ১লাখ ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। 
পেপুলবাড়িয়া বাজারের সিএনজি স্টান্ডের চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ করে সভাপতি গ্রুপের ফুলকোচা গ্রামের বাসিন্দা বিএনপির রায়হান মেম্বার। এছাড়া কসাইপট্টির ও কাঁচামালের দোকান থেকে চাঁদা আদায় করেন সভাপতি রেজাউল করিম খাঁন দুদু ও সহ-সভাপতি জহুরুল ইসলাম। এছাড়া বাগবাটী হাট দখল ও বৈদ্যধলডোব বালু মহলও নিয়ন্ত্রণ করেন সুবিধা ভোগী এই নেতারা। এলাকায় বিচার সালিসের নামে টাকা লেনদেন এদের ওপেন সিক্রেট। এদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে বাগবাটী, পেপুলবাড়িয়া তথা ২ নং ওয়ার্ডের আপামর সাধারণের জীবন যাত্রা। ভুক্তভোগীরা আক্ষেপ করে বলেন, এতোদিন আওয়ামী লীগের হাতে জিম্মি ছিলাম, এখন বিএনপির হাতে জিম্মি। এব্যাপারে অভিযুক্ত ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম খাঁন দুদু ও সহ-সভাপতি জহুরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
 


Side banner
Link copied!