শরীয়তপুর পৌর এলাকায় দখলে দূষণে বিপর্যস্ত একাধিক খাল গুলো মধ্যে রাজগঞ্জ খালটি উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে।
জেলা প্রশাসন ও পৌরসভার এমন উদ্যোগে খুশি স্থানীয়রা। আর খালটি সচল হলে মশা-মাছির উপদ্রব থেকে মুক্তি মেলার পাশাপাশি কৃষক্ষেত্রে সুফল পাবে স্থানীয় কৃষকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পদ্মার শাখানদী কীর্তিনাশা থেকে শুরু হয়ে ২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যে রাজগঞ্জ খালটি। একসময় পানি প্রবাহ সচল থাকায় খালটি দিয়ে চলাচল করতো বিভিন্ন নৌযান। তবে দীর্ঘ দের যুগ ধরে দখল আর দূষণে অস্তিত্ব হারিয়েছে প্রবাহমান খালটি। খালটির বিভিন্ন অংশে দোকানপাট ও বাসাবাড়ির ময়লা আবর্জনা ফেলায় পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে ছড়াচ্ছে তীব্র দূর্গন্ধ। এতে মশা মাছির উৎপাত বেড়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে পৌরবাসী। পাশাপাশি শহরের পানি খালে নামতে না পেরে বর্ষাকালে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। রবিবার সকালে খালটির প্রবাহ ফেরানোর কাজ শুরু করে জেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষ। প্রশাসনের এমন উদ্যোগে খুশি স্থানীয়রা। দ্রুত খালটি সচল করে পূর্বের অবস্থায় দেখতে চায় পৌরবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পৌরসভার সাবেক ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুস সালাম বেপারী বলেন, প্রশাসন একটি ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। কিছু কিছু মানুষের কারণে খালের বেশ কিছু জায়গা বেদখল হয়ে গেছে এই জায়গা উদ্ধার করতে হবে।আশপাশের মানুষের ব্যবহৃত পলিথিন ময়লা আবর্জনা জমে খালটি এখন দূষণে পরিপূর্ণ। পানি সরতে না পারায় তীব্র দুর্গন্ধে মশা মাছির উপদ্রব দেখা দিয়েছে। খালটি সচল হলে পানি প্রবাহ শুরু হবে এবং পরিবেশটি সুন্দর হয়ে উঠবে।
নাদিম নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, এই খাল দিয়ে এক সময় নৌকা চলাচল করতো। এখন দূষণের কারণে মশা মাছির উপদ্রব বেড়েছে এবং ডেঙ্গুর মতো বিভিন্ন রোগ ছড়াচ্ছে। প্রশাসনে এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। আমরা চাই দ্রুত খালটি সচল করা হোক।
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন সোহেল গণমাধ্যমকে বলেন, কালের পরিক্রমায় ভূমিদস্যুদের কারণে শরীয়তপুর সদর পৌরসভার অনেক খাল হারিয়ে গেছে বা হারিয়ে যাওয়ার পথে।সেই সাথে পালং বাজার রাজগঞ্জ ব্রিজ থেকে কীর্তিনাসা নদী পর্যন্ত প্রায় দুই কিলো শাখা খালটি বিলীন হওয়ার পথে।এই খালের দুপাশ বেশিরভাগই মানুষ দখল করে ফেলেছে।জেলা প্রশাসক মহোদয় পৌরসভায় যতগুলি খাল হারিয়ে যাওয়ার পথে এই খাল গুলি পুনরায় উদ্ধার করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে।২৪ নভেম্বর ২০২৪ সকাল ১১ টার দিকে জেলা প্রশাসকের নির্দেশক্রমে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে পৌরসভা প্রশাসক পিংকি সাহা এই খালটিকে সংস্কার করার জন্য উদ্বোধন করেন।
খালটি সচল করার সময়ে সবধরনের প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করার কথা জানিয়েছেন শরীয়তপুর পৌরসভা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পিংকি সাহা। তিনি বলেন, শরীয়তপুর পৌরসভায় যে খালগুলো প্রবাহমান ছিলো বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতায় বন্ধ হয়ে গেছে সেগুলো পুনরায় আমরা সচল করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আজ থেকে রাজগঞ্জ খালটি খনন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে যা কীর্তিনাশা নদীতে কানেক্ট করবে। খালটি সচল করতে গিয়ে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা পড়লে তাও অপসারণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :