ফরিদপুরের সদরপুরে গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন হাসি বেগম নামের এক গৃহবধূ। এরপর ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ভাঙ্গা উপজেলায় পাওয়া এক নারীর অর্ধগলিত মরদেহকে হাসি বেগমের বলে শনাক্ত করেন তার মা। পরে ওই মরদেহ দাফন করে হাসি বেগমের পরিবার। দাফনের পাঁচদিন পর হাসি বেগমকে জীবিত উদ্ধার করে পুলিশ।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে হাসি বেগমকে উদ্ধার করে সদরপুর নিয়ে আসা হয়।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৮ বছর আগে সদরপুর উপজেলার চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মোতালেব শেখের সঙ্গে বিয়ে হয় হাসি বেগমের। তাদের সাত বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর হাসি বেগম বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার কথা বলে শ্বশুর বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
এ ঘটনায় হাসি বেগমের বাবা শেখ হাবিবুর রহমান গত ১১ সেপ্টেম্বর সদরপুর থানায় একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তার মেয়ে হাসি বেগমকে হত্যা করে মরদেহ গুম করেছেন জামাতা মোতালেব শেখ।
এর দুইদিন পর ১৪ সেপ্টেম্বর হাসি বেগমের স্বামী মোতালেব শেখ সদরপুর থানায় পাল্টা একটি অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, হাসি বেগম নগদ টাকাসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে বাবার বাড়িতে পালিয়ে গেছেন।
এরপর ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের আদমপুর এলাকার নাউটানা এলাকায় কচুরিপানার ভেতর থেকে এক নারীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে নিখোঁজ হাসি বেগমের মা সালমা বেগম মরদেহ হাসি বেগমের হিসেবে শনাক্ত করেন। এরপর ময়নাতদন্ত ও আইনগত প্রক্রিয়ার পর শৌলডুবী মদিনাতুল কবরস্থানে ওই মরদেহ দাফন করা হয়।
এদিকে, অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ চলা অবস্থায় ২৩ সেপ্টেম্বর হাসি বেগম ফোন করে তার বাবা-মাকে জানান তিনি জীবিত আছেন। এরপর সোমবার সদরপুর থানা পুলিশ হাসি বেগমকে ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদের সদস্য এখলাছ আলী বলেন, এ রকম একটি ঘটনা লোকমুখে শুনেছি। কিন্তু বিস্তারিত তথ্য জানতে পারিনি।
সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুন আল রশিদ বলেন, হাসি বেগমকে ময়মনসিংহের নান্দাইল এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি থানায় আছেন। এখনই এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানানো সম্ভব নয়। ঘটনাটি ভাঙ্গা ও সদরপুর থানা জড়িয়ে। ফলে সব তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।
আপনার মতামত লিখুন :