• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঠিকাদার ইউএনও’র ভাই


FavIcon
নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: আগস্ট ৩০, ২০২৩, ০৬:১০ পিএম
প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঠিকাদার ইউএনও’র ভাই
ছবি - সংগৃহীত

ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজলায় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারমূলক জনগুরুত্বপূর্ণ আশ্রয়ণ প্রকল্পে ভূমিহীনদের জন্য ঘর নির্মাণে নানা অনিয়মের অভিযাগ উঠেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের ছত্রছায়ায় তার ছােটভাই শামীমর তত্তাবধানে বাস্তবায়িত প্রকল্পে ব্যাপক দূর্নীতি-লুটপাট করা হয়েছে। নিন্মমানের নির্মান সামগ্রী, প্রয়োজনের তুলনায় কম মালের ব্যবহার ও ইচ্ছেমতো কাজ করতে নিজ এলাকা রাজশাহী থেকে আনা নির্মান শ্রমিক দিয়ে কাজ করিয়েছেন দুইভাই। 
অতিসম্প্রতি আশ্রয়নের ঘর নির্মাণকাজে ইউএনও'র ভাইয়ের সম্পৃক্ততাসহ নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের একটি ভিডিও পাওয়া গেছে। সেই ভিডিওর সূত্রধরে অনুসন্ধানে মিলছে ভয়াবহ দুর্নীতির তথ্যও।
সূত্রমতে, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে প্রধানমন্ত্রীর  কার্যালয়ের আশ্রয়ণপ্রকল্প-২ এর আওতায় ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় চতুর্থ পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে উপজেলার জােড়াপুল বাজার সংলগ্ন ক্লাস্টারে ৫০ টি ঘর নির্মান করা হয়েছে। প্রকল্পটির নাম আদর্শ আশ্রয়ণ প্রকল্প দেয়া হলেও অর্ধশত ঘর নির্মানে আদর্শহীন ভাবে করা হয়েছে অনিয়ম-দূর্নীতি। প্রকল্প এলাকায় উপকারভােগীদর জন্য মসজিদ,গোরস্থান, স্কুল, খেলার মাঠ ও পার্কসহ নানা সুবিধা পাবার কথা রয়েছে। 
সরজমিন অনুসন্ধানে জানাগেছে, আদর্শ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান (চঞ্চল) আদর্শের ধার ধারেননি। ৫০ টি ঘর নির্মাণে নিজস্ব রাজমিস্ত্রি নিয়ােগ দেওয়াসহ সব কেনাকাটা একাই করছেন তিনি। আর কাজ তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তার আপন ছােট ভাই শামীম ও তার ভাইয়ের ছেলেসহ নিজ এলাকার একাধিক আত্বীয়-স্বজনকে। এমনকি উপজলা নির্বহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান কাঠালিয়াতে যােগদান করার পর থেকে তার একাধিক আত্বীয়-স্বজন এখানই বসবাস করছে বলে জানাগেছে। 
জোড়াপুল বাজারের একাধিক বাসিন্ধা জানায়, ‘কাজ করিয়েছে ইউএনও’র ছােটভাই। কাজ উপর থেকে ভালাে দেখালও ভিতরে ব্যবহার করা হয়েছে আধাপাঁকা ইট। এছাড়াও কাজ সিমিন্টের পরিমান খুবই কম দেওয়া হয়েছে।’ এছাড়াও নিজের ইচ্ছামতাে কাজ করাতে ইউএনও ও তারভাই নিজ এলাকা রাজশাহী থেকে মিস্ত্রি ও শ্রমিক এনে প্রকল্পের কাজ করিয়েছেন। সম্প্রতি এই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া বদলি হওয়ায় তড়িঘড়ি করে শেষ করছে প্রকল্পের কাজ। 
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য ‘ প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরগুলা আশির্বাদ স্বরুপ হলেও কাঠালিয়ায় হচ্ছে তার উল্টাে। এখানে সব ঘরগুলাে নির্মাণে সরকারী কর্মকর্তারাই নানা অনিয়ম করছে। জমিতে বালু ভরাটের সাথে সাথে পনি-বালুর ওপর ঘরগুলাের দেয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। ঘরগুলােতে যে ইট, কাঠ, টিন, রড ও বালু ব্যবহার করা হয়েছে তার সবই নিম্নমানের  ও অপ্রতুল। বেড়ায় ক্ষেত খেলে সাধারন মানুষ আর কি করবে বলেও মন্তাব্য করেন তারা।
এবিষয় উপজলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান তার ভাই শামীমকে দিয় প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এ প্রকল্প কােন ঠিকাদার বা বাইরের কাউকে দিয়ে কাজ করানাের সুযােগ নেই। বিধি অনুযায়ী উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তার তত্তাবধানে যথা নিয়মে কাজ চলছে। কাজে নিম্নমানের মালামাল ব্যবহারর অভিযােগ তিনি অস্বীকার করেন।
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক ফারাহ্ গুল নিঝুম বলেন, আশ্রয়ন প্রকল্পের কাজ ইউএনও'র ভাই করিয়েছে এ বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 


Side banner
Link copied!